ভৌতিক গল্প: "পিশাচের ছায়া"
ঢাকার শহরতলির একটি পুরনো গ্রামে ছিল একটি ভাঙা জমিদার বাড়ি। এলাকাবাসী বলত, এই বাড়ির দক্ষিণ কোণের ঘরে কোনো পিশাচের বাস। রাত নামলেই অদ্ভুত কান্নার আওয়াজ শোনা যেত। কিন্তু সাহস করে কেউই সেই বাড়ির কাছে যেত না।
একদিন শহর থেকে আসা তরুণ সাংবাদিক রাহাত ঠিক করল, এই রহস্যের সমাধান সে করবেই। গ্রামের মুরুব্বিরা তাকে নিষেধ করল, কিন্তু রাহাতের কৌতূহল দমল না।
রাতে সে টর্চ আর ক্যামেরা নিয়ে জমিদার বাড়ির দিকে রওনা দিল। চাঁদের আলোতে ভাঙা বাড়িটা যেন আরও ভুতুড়ে লাগছিল। দরজাটা ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই একটা ঠান্ডা হাওয়া তার গায়ে লাগল। ভাঙা সিঁড়ি পেরিয়ে সে সেই দক্ষিণ কোণের ঘরের সামনে দাঁড়াল। দরজাটা নিজের থেকেই খুলে গেল!
ভেতরে ঢুকে রাহাত যা দেখল, তা দেখে তার শরীর কাঁপতে লাগল। একটা পুরনো আয়নার সামনে একজন নারী দাঁড়িয়ে আছে। তার চোখে কোনো মায়া নেই, শুধু অন্ধকার। রাহাতের মনে হলো, নারীটি তাকে ইশারা করছে।
রাহাত ক্যামেরা তুলতেই নারীটি চিৎকার করে উঠল, “আমার ছবি তুলবি? আমি এখানে বন্দি, আর তুইও আমার মতো হবে!”
এক মুহূর্তে পুরো ঘর কালো ধোঁয়ায় ভরে গেল। রাহাত কিছু দেখতে পাচ্ছিল না। তবে সে অনুভব করল, যেন হাজারো হাত তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
সকালের আলো ফুটতেই গ্রামবাসীরা বাড়িটির সামনে ভিড় করল। তারা রাহাতকে খুঁজতে গিয়ে দেখল, ঘরের মেঝেতে রাহাতের ক্যামেরা পড়ে আছে, আর তার মধ্যে শুধু একটি ছবি – এক নারীর অন্ধকারময় চেহারা।
রাহাত আর কখনোই ফিরে আসেনি। জমিদার বাড়িটি এখনও ধ্বংসস্তূপ হয়ে আছে। আর সেই দক্ষিণ কোণের ঘরে রাতে গেলে আজও শোনা যায় কান্নার আওয়াজ।
Post a Comment