আয়নার অভিশাপ
বৃষ্টি পড়ছে বাইরে, সেই রাতটা ছিল কালো চাঁদর মতো অন্ধকার। অর্ক আর তার বন্ধু শুভ, দুজনে মিলে একটা পুরোনো ভুতুড়ে বাড়িতে ঘুরতে যায়। বন্ধুরা বলে—"ওই বাড়িতে রাত কাটাতে গেলে অনেক অদ্ভুত কিছু ঘটে।" কিন্তু দুজনেরই সাহস ছিল, কেউ কারও কথা শুনতে চায় না।
বাড়িটাতে প্রবেশ করতে গিয়ে একটা বিশাল কাঠের দরজা খোলা হয়েছিল। ধূলিধূসর পরিবেশে তেমন কিছু দেখতে পাচ্ছিল না, কিন্তু একটা বদ্ধ বাতাস যেন সমস্ত ঘরে ঘুরপাক খাচ্ছিল। অর্ক লাইট জ্বালাতে গিয়ে দেখে লাইটটা কাজ করছে না। শুভ বলল, "মনে হয় অনেক পুরোনো এই বাল্ব।" তখন তারা দুজনেই মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে ঘরটা দেখতে লাগলো।
ঘরের মধ্যে কিছু ভাঙা আসবাবপত্র, একটা বুড়ো আয়না, আর বেশ কিছু পুরোনো পুতুল ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। আয়নাটার দিকে তাকাতেই অর্কের একটা অদ্ভুত কিছু মনে হলো। সে যেন নিজেকেই দেখছে না, বরং একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে—অভিশপ্ত চুলের ঝালর, চোখ দুটো অস্বাভাবিক বড় আর কালো, ঠোঁটে একটা অদ্ভুত হাসি।
শুভকে বলতেই, শুভ বলল, "এটা হয়তো তোর মনের ভুল।" কিন্তু অর্ক কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না। সেই মেয়েটির ছবি ক্রমেই আয়নার মধ্যে স্পষ্ট হচ্ছিল। যেন ওদের দিকে তাকিয়ে হেসে বলছে—"আমাকে তোমরা ভুলে গেছো?" শুভ আর অর্ক একটু ভীত হয়ে উঠল।
এমন সময় পিছন থেকে একটা কণ্ঠস্বর শুনতে পেল। সেই কণ্ঠটা যেন কান পাতলেই পুরো শরীরটা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। "আমাকে সাহায্য করো..." কণ্ঠটা বার বার বলছে। অর্ক পিছনে ফিরে দেখে, ঘরের এক কোনে একটা মেয়ে বসে আছে, মাথা নিচু করে কাঁদছে।
অর্ক শুভকে বললো, "ওই মেয়েটা কি তুই দেখছিস?" শুভ কিছু বলছে না, মুখে সাদা ফ্যাকাশে ভাব। সে হঠাৎ করে অর্কের হাত ধরে দৌড়াতে শুরু করল। তারা বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে কিন্তু দরজাটা যেন আর খোলার নাম নিচ্ছে না। যেন বাইরে থেকে কেউ বা কিছু আটকে রেখেছে। সেই কণ্ঠস্বরটা তখনও শোনা যাচ্ছে, "আমাকে ছেড়ে যেও না... আমাকে সাহায্য করো..."
Read More!!
Post a Comment